4/18/2024

আলপনা কী ও কেন ড. বিভূতিভূষণ মিত্র

 য়েক ছত্র


আলপনা কী ও কেন

ড. বিভূতিভূষণ মিত্র


প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৪

ড. বিভূতিভূষণ মিত্রখুব বেশি দিন আগে নয়, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম উদ্বোধন করেন ফ্লাইওভার পিলারের আলপনা কার্যক্রম। যার উদ্দেশ্য শহরের বিভিন্ন দেয়ালে যত্রতত্র পোস্টারের কারণে যে দৃশ্যদূষণ তৈরি হয় তা দূর করা এবং একই সঙ্গে এই সব আলপনার মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা। আলপনাগুলোতে ফুল, পাখি, নানা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, গাছ লাগানো—এসব বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে ফুটিয়ে তোলা হয়। এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো এবং অভিনব উদ্যোগ। আলপনার মতো একটি বিষয়কে যে উদ্দেশে ব্যবহার করা হলো তা সত্যিকার অর্থেই প্রশংসার দাবিদার।



তবে আলপনার এসব ব্যবহার কিন্তু আজকের নয়। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষে আলপনা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘এটি একধরনের চিত্র, যা মঙ্গলজনক কাজে ঘরের দরজায়, আঙিনায়, দেয়ালে আঁকা হয়।’ আলপনা এখন আরও বিস্তৃত হয়েছে। এটি বিকশিত এবং আধুনিক হয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে এই আলপনা শুধু ভারতবর্ষে নয়, এটি মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়ায়ও দেখা গেছে। এমনকি এই ধরনটি ব্রোঞ্জ এবং তাম্র যুগে ফলকের মধ্যে যে চিত্র দেখা যায় তার সঙ্গেও মিল রয়েছে; অর্থাৎ আলপনাকে এককথায় শিল্পের আদি একটি ফর্ম হিসেবেই ধরা যায়। 

ভারতবর্ষে বৈদিক যুগ থেকে আলপনার দেখা মেলে। সে সময় স্বস্তিকা চিহ্ন আঁকা হতো। এটি এখনো আঁকা হয়। পৌরাণিক যুগে এটি আরও একটু বিকশিত হয়েছে। এ সময় লক্ষ্মীর পা, ঘট—এসব আঁকা হতো। ধীরে ধীরে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পাতা, লতা, ফুল।
বাংলাদেশে আলপনার একটি বিশেষ ধরন রয়েছে। সেটি হলো, বাংলাদেশে যে আলপনা আঁকা হয়, তাতে সাদা রঙের প্রভাব বেশি থাকে। এখানে চালের গুঁড়া দিয়ে মাটির দেয়াল লেপে শুকিয়ে আলপনা আঁকা হয়।

আলপনা বিয়ের পিঁড়ি, ছোট ছোট সিঁড়ি, ঘরের কোনা বা মাঝখানে আঁকা হয়। এ ছাড়া আধুনিক কালে বিভিন্ন পাঞ্জাবি, টি-শার্টের বুকে-পিঠে, মেয়েদের শাড়ি বা ওড়নায় আলপনা ব্যবহৃত হয়। নবান্নেও আলপনা আঁকা হয়। আলপনায় মানুষ, মাছ, বাঘ, হাতি, ময়ূর, প্যাঁচা যেমন দেখা যায়, তেমনি ধানের ছড়া, জবা ফুল, দোলনচাঁপা ইত্যাদিও আঁকতে দেখা যায়। 



আলপনা নানা ধরনের হতে পারে। কিছু আলপনা বিমূর্ত। আবার কিছু আলপনা বাস্তবধর্মী। অনেক আলপনা প্রতীকধর্মী আবার মিশ্রধর্মীও রয়েছে। আগে মুসলিম মেয়েরা বিয়ে বা উৎসবে আলপনা আঁকত। এটি এখনো চর্চিত। এ ছাড়া হাতে মেহেদি দিয়ে নানা আলপনা এঁকে থাকে মুসলিম মেয়েরা।

মজার বিষয় হলো, বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের টিকোইল নামে একটি গ্রাম রয়েছে, যাকে বলা হয় আলপনার গ্রাম। এই গ্রামের বাসিন্দারা আলপনা আঁকেন। হয় বিয়েবাড়িতে, নাহয় উৎসবে। ঝড়-বৃষ্টি বা রোদ, যেকোনো দিনেই ছোট থেকে বুড়ো সবাই আঁকেন আলপনা। আতপ চালের গুঁড়া দিয়ে সাদা রং আর খড়িমাটি দিয়ে লাল রং তৈরি করেন। আলপনার রং তৈরির জন্য ব্যবহার করেন শুকনো বরই, আমের আঁটির শাঁস, মানকচু ও কলাগাছ। এসব দিয়ে তৈরি রং ফিকে হয়ে গেলে আবার নতুন করে রং করেন।

আলপনা আধুনিক কালে নানাভাবে বিবর্তিত হয়েছে। ভারতে বিভিন্ন উৎসবে রাস্তায় আলপনা আঁকা হয়। পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক প্রচার কর্মসূচিতেও আলপনা ব্যবহৃত হয়। বিশ্বভারতীতে বর্তমানে এটি ফাউন্ডেশন কোর্স হিসেবে পড়ানো হয়। এ ছাড়া ভারতীয় আধুনিক শিল্পী নন্দলাল বসু অনেক আলপনা এঁকেছেন। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আলপনা নিয়ে বই রয়েছে। বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়, যিনি তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন একজন গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে, তিনিও আলপনা তাঁর বিজ্ঞাপনে, অঙ্কনে, বইয়ের কভারে ব্যবহার করেছেন। যামিনী রায়, দেবী প্রসাদের কাজও উল্লেখ করার মতো। বাংলাদেশে আলপনা আরও ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। এখানে তা ভাষা দিবস এবং পয়লা বৈশাখে আঁকা হচ্ছে। আলপনা প্রতীকীভাবে আঁকেন মূলত হিন্দু নারীরা নানা রকম ব্রত অনুষ্ঠানে। নানা অমঙ্গল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তাঁরা দেব-দেবীর প্রতীক অঙ্কন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন; বিশেষ করে লক্ষ্মীপূজায় আলপনা বেশি দেখা যায়। তবে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী সাঁওতালদের আলপনায় নানা জ্যামিতিক কাঠামো দেখা যায়।



প্রাচীনকাল থেকে নানাভাবে চর্চিত হয়েছে আলপনা। নানা উদ্দেশে বিকশিত হয়েছে। বাংলাদেশে আলপনা বিশেষ রূপে, বিশেষ উদ্দেশে চর্চিত হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের আলপনা আলাদা ও বিশেষ রূপে বিকশিত হয়ে শিল্পে আলাদা বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। ভাষা আন্দোলন, পয়লা বৈশাখ ও নবান্ন উৎসবে এর ভিন্ন রূপে প্রকাশ ও বিকাশ আলাদা মাত্রা দিয়েছে, যেটি অন্য কোথাও এমনকি ভারতেও হয়নি। এই আলপনা একান্তই আমাদের, অর্থাৎ বাংলাদেশের হয়ে উঠেছে। এটি আরও শিল্পীদের হাতে বিকশিত হয়ে বিশেষ মাত্রা পাবে। কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার অলঅয়েদার সড়কের মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার আলপনাই এর প্রমাণ।

লেখক: ড. বিভূতিভূষণ মিত্র, শিক্ষক ও গবেষক


https://www.google.com/amp/s/www.ajkerpatrika.com/amp/331027/%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%25B2%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE-%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%2580-%25E0%25A6%2593-%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25A8

সুপেয় পানির সংকট বাড়ছেই ড. বিভূতি ভূষণ মিত্র


 

আইন অমান্যের পরও নেই প্রতিবিধান ড. বিভূতি ভূষণ মিত্র

 



আইন অমান্যের পরও নেই প্রতিবিধান

ড. বিভূতি ভূষণ মিত্র

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৫১ এএম

ড. বিভূতি ভূষণ মিত্র

বন্য প্রাণী পাচার বলতে সংরক্ষিত উদ্ভিদ প্রাণী প্রজাতির অবৈধ ব্যবসা বোঝায়। এ অবৈধ ব্যবসা অনেক কিছু নিয়েই হতে পারে। এটা খাবার, চামড়া, কাঠ পাচারও হতে পারে। অনেক বন্য প্রাণী পাচার হয় যা হয়তো বিপদসংকুল প্রজাতি নয়। কিন্তু বন্য প্রাণী পাচারের কারণেই অনেক এলাকা এখন বিপদসংকুল। অপ্রতুল জীববৈচিত্র্য আর বন্য প্রাণী পাচারের কারণে লাতিন আমেরিকা এখন বিপদসংকুল। ব্রাজিলের একটি সংস্থার মতে, প্রতি বছর ১২ মিলিয়ন বন্য প্রাণী পাচার হয় সে দেশে। পৃথিবীর অধিকাংশ বন হারিয়ে গেছে কাঠের জন্য কৃষিবন করে। এ ছাড়া প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৫১ থেকে ১৫২ বিলিয়ন ডলার অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীদের কারণে ধ্বংস হচ্ছে। অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে অনেক দেশের বন হারিয়ে যেতে বসেছে। গত ২৫ বছরে ঘানায় ৮০ ভাগ প্রাকৃতিক বন ধ্বংস হয়ে গেছে। ২০১১ সালের তুলনায় কম্বোডিয়ায় প্রায় ৬৪ ভাগ বন নেই হয়ে গেছে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীতে ৬০ ভাগের বেশি বন্য প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে অবৈধ বন্য প্রাণী ব্যবসার কারণে। প্রতি বছর ১০০ মিলিয়ন উদ্ভিদ ও প্রাণী আন্তর্জাতিকভাবে অবৈধ ব্যবসার কবলে পড়ছে। মূলত পোষ মানা, ওষুধ ও খাদ্যের কাজে বন্য প্রাণী ব্যবহারের জন্য এসব বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতি বছর ৪ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলারের অবৈধ ব্যবসা হচ্ছে। অবৈধ বন্য প্রাণীর ব্যবসা স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি করছে। এর ফলে দূষণ, বন কাটা ও অন্যান্য আবাসভূমির ধ্বংস শুরু হচ্ছে। এটা স্থানীয় অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।



আন্তর্জাতিক পাচারকারীরা এখন অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে গন্ডার শনাক্ত ও হত্যা করছে। অধিকাংশ জেলে হাঙরের পাখনা সংগ্রহ করতে চায়। কারণ এটা অত্যন্ত মূল্যবান। অনেকে একে সৌভাগ্যের প্রতীক ভেবে চড়া দামে কেনে। হাজার হাজার বছর ধরে সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রে হাঙর অন্যতম প্রধান উপাদান। পুষ্টি সরবরাহ ও কার্বন শোষণের মাধ্যমে এরা বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য টিকিয়ে রেখেছে। বর্তমানে হাঙর আর বাস্তুতন্ত্র দুটিই হুমকির মুখে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১০০ মিলিয়ন হাঙর প্রতি বছর হত্যা করা হয়। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হাঙর প্রজাতি হুমকির মুখে এবং বেশ কিছু হাঙর প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। হাঙরের হারিয়ে যাওয়া সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। হাঙরের মতো এ রকম অর্থনৈতিক মূল্যবান মাছের সংখ্যা কমে যাওয়া বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণ হচ্ছে। এ সমস্যা মোকাবিলায় বিমান চলাচল রুটে সতর্ক থাকতে হবে। বন্য প্রাণী পাচারে বিমান রুট ব্যবহার করা হয়।

এসব অবৈধ বন্য প্রাণী ব্যবসা বন্ধে বেশ কিছু মামলাও হয়েছে। এর মধ্যে বিখ্যাত একটি মামলা হচ্ছে ২০১৬ সালে ভার্জিনিয়ায় লুম্বার কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা। ওই কোম্পানিকে তখন ১৩ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছিল। একটি তথ্যমতে, বাংলাদেশের আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, চুনতি এসব এলাকার গভীর বন থেকে পাচারকারীরা প্রাণী সংগ্রহ করে। তারপর সাতক্ষীরা ও চকরিয়া পথে পাচার করে। ২০২১-২২ বছরে মোট ৪২৫টি বন্য প্রাণী পাচার হয়েছে চট্টগ্রামে। ক্রমে বন্য প্রাণী পাচারের বড় রুট হয়ে উঠছে চট্টগ্রাম। বান্দরবান ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় ধরা বন্য প্রাণী চট্টগ্রাম রুটে পাচারের পথে আটকও করা হয়েছে। ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ওয়াইল্ডলাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিট ১৬ হাজার বন্য প্রাণী মুক্ত করেছে। সংস্থাটি এ অবৈধ ব্যবসায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা করেছে। অবৈধভাবে বন্য প্রাণী ধরার জন্য মোট ৩৮ ব্যক্তিকে এ সময় পর্যন্ত সাজা দেওয়া হয়েছে। অবৈধ বন্য প্রাণী ব্যবসা বিশেষ করে বাঘ, কুমির, কচ্ছপ ইত্যাদি মূল্যবান প্রাণী বিক্রি হয়।



ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির মতে, বছরে ৪.২ থেকে ৯.৫ বিলিয়ন মূল্যের বাণিজ্য হয় অনিয়ন্ত্রিত অবৈধ মাছ ব্যবসার মাধ্যমে। অবৈধ বন্য প্রাণী নিয়ে ব্যবসা হয় বছরে ৭.৮ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার আর অবৈধ কাঠ ব্যবসা হয় বছরে ৭ বিলিয়ন ডলার। নানা কারণে এ অবৈধ বন্য প্রাণী পাচার বেড়েই চলেছে। বন্য প্রাণীর মাংস বিক্রি, ওষুধের কাজ, অলংকার তৈরি, পোষ মানাতে বন্য প্রাণীর ব্যবহার বেড়েই চলেছে। বন্য প্রানীর এ অবৈধ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে জাতিসংঘের সংগঠন কনভেনশন অন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইন এন্ডেনজারড্‌ স্পেসিস অব ওয়াইল্ড ফনা অ্যান্ড ফ্লোরা। এখন এর ১৭০টি সদস্য। এর মাধ্যমে বন্য প্রাণী, মাছ ও উদ্ভিদ রক্ষা করা হয়। বন্য প্রাণীর ব্যবহার বন্ধে আইন প্রথম দিকে শুধু বন্য প্রাণীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হতো। পরে কাষ্ঠল উদ্ভিদসহ ওষুধের কাজে ব্যবহৃত উদ্ভিদও এর আওতায় আনা হয়।

বাংলাদেশেও বন্য প্রাণীর অবৈধ ব্যবসার মূল কারণ বন্য প্রাণীর মাংস বিক্রি। হরিণের মাংস বিক্রির খবর প্রায়ই পত্রিকায় পাওয়া যায়। বাংলাদেশে ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিট সক্রিয় থাকলেও সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তারে অপারগ। বাঘ ও কুমিরের শরীরের নানা অংশ অবৈধভাবে ব্যবসা হয়। পত্রিকার খবর দেখে বোঝা যায় নানা দুর্বলতার সুযোগে বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর দিয়ে পাচার ঘটছে। বাংলাদেশে বন্য প্রাণী ব্যবসা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও ২০১২ সাল থেকে বন্য প্রাণী ধরা-মারা নিষেধ। তার পরও বন্য প্রাণী হত্যার রেওয়াজটা এখনও আছে। বন্য প্রাণীর অবৈধ ব্যবসা অনেক প্রজাতির জন্যই হুমকিস্বরূপ। এসব বন্ধে বন্য প্রাণী সংক্রান্ত অপরাধ বন্ধে উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশে ২০১২ সাল থেকে বন্য প্রাণী আইন কার্যকর। এ আইন অনুযায়ী বাঘ বা হাতি হত্যা বা বিক্রির সাজা, জামিন ও জরিমানা রয়েছে। হাতি বা বাঘের কোনো অংশ পাওয়া গেলে সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল অথবা ৩ লাখ টাকা জরিমানা হতে পারে। ২০১৯ সালে ঢাকায় বিমানবন্দর দিয়ে কচ্ছপ পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়ে পাচারকারী। সঙ্গে সোনাও পাওয়া যায়। সে সময় এটা সংবাদপত্রে আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল।

বন্য প্রাণী পাচার বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সমস্যা। বন্য প্রাণী ধরা-মারা নিষিদ্ধ হওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা নিয়ে তেমন কথা বলেন না। তবে সংবাদ ও সমাজমাধ্যমে এ নিয়ে কথা হচ্ছে। সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ বন্য প্রাণী ধরা-মারা-পাচারের বিরুদ্ধে একমত হচ্ছে। কিন্তু তারপরও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সুফল কেন মিলছে না এর অনুসন্ধান জরুরি। সরকারি-বেসরকারি সংস্থাকেও আরও এগিয়ে আসতে হবে। বন্য প্রাণী হত্যাও যে ঘৃণ্য অপরাধ- এ চেতনা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তবেই পাচার বন্ধ হবে।

শিক্ষক ও গবেষক